নিউজিল্যান্ড
লর্ড অব দ্যা রিং ছবিটি সবাই দেখেছেন তাই না? মিডেল আর্থের ওইসব পাহাড়পর্বত নিউজিল্যান্ডে অবস্থিত।
ফ্রোডো বাগিন্স এবং তার বন্ধুদের দেশ ছাড়াও ওশেনিয়ায় নিউজিল্যান্ড অস্ট্রেলিয়ার প্রতিবেশী দেশ। প্রশান্ত মহাসাগরের দক্ষিন অঞ্চলে।
দেশটি প্রধানত ২টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত। উত্তর দ্বীপ এবং দক্ষিন দ্বীপ, এবং অন্যান্য ছোট ছোট দ্বীপ।
তাদের দেশে মানুষের চেয়ে ভেড়া বেশী, আর সেজন্য তারা বিখ্যাত। নিউজিল্যান্ডে ৪ মিলিয়ন মানুষ আর ৪০ মিলিয়ন ভেড়ার বসবাস। ২০১১ সালে নিউ ইয়র্কের জনসংখ্যা ছিল ৮.৪ মিলিয়ন।
নিউজিল্যান্ডকে এর আরেক নাম হল Aotearoa, যার অর্থ মাওরিতে “Land of the Long White Cloud”। মাওরি তাদের প্রধান ভাষার মধ্যে একটি।
নিউজিল্যান্ডঃ ফ্যাক্টস, ফিগারস, এবং ফিচারস
প্রতিবেশী দেশ: অস্ট্রেলিয়া, ফিজি, টোঙ্গা
আয়তন: ১০৪,৪৫৪ বর্গ মাইল
জনসংখ্যা: ৪,২৬৮,৬০০ (১২৪ তম)
ঘনত্ব: ৪০.৯ জন প্রতি বর্গ মাইলে
রাজধানী: ওয়েলিংটন (জনসংখ্যা ১৭৯,৪৬৬)
রাষ্ট্র প্রধান: রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ
সরকার প্রধান: Prime Minister John Key
মুদ্রা: নিউজিল্যান্ড ডলার (NZD)
মুখ্য আমদানি: যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম, যানবাহন এবং বিমান, পেট্রোলিয়াম, ইলেকট্রনিক্স, টেক্সটাইল, প্লাস্টিক
মুখ্য রপ্তানি: রাসেল ক্রো, আকরিক এবং ধাতু; উল, খাদ্য ও লাইভ প্রাণী; জ্বালানি, পরিবহন যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম।
আমদানি পার্টনার: জার্মানি ১৩.৫%, ইউএস ১০.২%, ফ্রান্স ৮.১%, নেদারল্যান্ডস ৬.৩%, বেলজিয়াম ৪.৯%, ইতালি ৪.৭%
রপ্তানি পার্টনার: ইউএস ১৫.৭%, জার্মানি ১০.৫%, ফ্রান্স ৯.৫%, নেদারল্যান্ডস ৬.৯%, ৬.৫% আয়ারল্যান্ড, বেলজিয়াম ৫.৬%, ৪.৪% স্পেন, ইতালি ৪.৪%
টাইম জোন: জিএমটি +12
ওয়েবসাইট: http://www.newzealand.govt.nz
ইকোনোমিক ওভারভিউ
তাদের জনসংখ্যা যেমন কম, নিউজিল্যান্ডের ইকোনোমিও তুলনামুলকভাবে ছোট। তাদের জিডিপি ২০১১ সালে ১২৩ বিলিয়ন ইউএসডি এর সমান ছিল, আর তারা ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিতে ৬৫তম হয়েছিলো। তাই বলে নিউজিল্যান্ডকে অবমূল্যায়ন করবেন না। বাণিজ্যের দিক দিয়ে তারা যথেষ্ট শক্তিশালী।
তাদের অর্থনৈতিক কার্যকলাপ ট্রেডের উপর নির্ভরশীল, বিশেষকরে অস্ট্রেলিয়া, জাপান, এবং ইউএস এর সাথে। তারা রপ্তানি নির্ভর দেশ। তাদের মুখ্য রপ্তানিদ্রব্য আকরিক, ধাতু এবং উল তাদের জিডিপির ৩ ভাগের ১ ভাগ দখল করে আছে। এছাড়াও তারা গবাদি পশু এবং দুগ্ধ জাতীয় পণ্য রপ্তানি করে। “দুধের সেরা দুধ” – কোন ঘণ্টা বাজলো?
তাদের প্রধান ইন্ডাস্ট্রি হল কৃষি এবং পর্যটন। তাদের আবার ছোটখাটো ম্যানুফ্যাকচারিং এবং টেকনোলজি সেক্টর আছে। একারনে, তাদের আমদানি দ্রব্য মুলত ভারী যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম, যানবাহন, এবং ইলেকট্রনিক পণ্য হয়ে থাকে।
তারা যখন ফরেন ইনভেস্টমেন্টে অনেক বাধা তুলে দেয়, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক তাদের সেরা বিজনেস-ফ্রেন্ডলি দেশের মধ্যে একটির উপাধি দেয়। সিঙ্গাপুরের পরে।
মনেটারি এবং ফিস্ক্যাল পলিসি
রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউজিল্যান্ড (RBNZ)দেশের মনেটারি এবং ফিস্ক্যাল পলিসির দায়িত্বে আছে। বর্তমানে গভর্নর Alan Bollard এর নেতৃত্বে, RBNZ বছরে ৮ বার মনেটারি পলিসি মিটিং ডাকে। RBNZ এর কাজ হল প্রাইসে স্থিতিশীলতা রাখা, ইন্টেরেস্ট রেট নির্ধারণ কড়া, এবং আউটপুট এবং এক্সচেঞ্জ রেট মনিটর করা।
প্রাইসে স্থিতিশীলতা আনতে, RBNZ বাৎসরিক ১.৫% ইনফ্লেশন রেট টার্গেট নিশ্চিত করে। অন্যথায় সরকারের RBNZ গভর্নরের নিতম্বে লাথি দিয়ে বের করে দেয়ার ক্ষমতা আছে। (ফাজলামি করছি না)
RBNZ এর নিম্নোক্ত মনেটারি পলিসি ট্যুল আছেঃ
অফিসিয়াল ক্যাশ রেট (OCR), এটা সর্ট-টার্ম ইন্টেরেস্ট রেটে প্রভাব ফেলে। এটা RBNZ এর গভর্নর নির্ধারণ করে। সেন্ট্রাল ব্যাংক OCR রেটের ২৫ বেসিস পয়েন্ট বেশীতে ঋণ দেয় এবং কমার্শিয়াল ব্যাংক থেকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমে ঋণ নেয়। এতে কমার্শিয়াল ব্যাংক যে ব্যাক্তি এবং ব্যাবসাকে যে রেট অফার করে সেটা সেন্ট্রাল ব্যাংককে ইনফ্লেশন কন্ট্রোল করতে সহায়তা করে।
ওপেন মার্কেট অপারেশনস ক্যাশ টার্গেট এবং কমার্শিয়াল ব্যাংকে কত পরিমান রিজার্ভ থাকবে, সেক্ষেত্রে ব্যাবহার করা হয়। প্রতিদিন ক্যাশ টার্গেট ফোরকাস্ট করে, RBNZ ইকোনোমিতে কত পরিমানে অর্থ প্রয়োজন সেটা গননা করে।
NZD কে চেনা
নিউজিল্যান্ড ডলারের ডাকনাম হল “Kiwi”। এটা একটা পাখির নাম! Kiwi আবার নিউজিল্যান্ডের জাতীয় প্রতীক। এসবের দিকে না তাকিয়ে কারেন্সি এবং এর অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের দিকে তাকাই।
কি আছে (কমোডিটি) তা দেখান!
যেহেতু নিউজিল্যান্ড কমোডিটি এবং কৃষিজাত পণ্য রপ্তানির উপর নির্ভরশীল, তাদের ইকোনোমিক পারফর্মেন্স কমোডিটি প্রাইসের সাথে সম্পর্কযুক্ত।
যদি কমোডিটির প্রাইস বাড়ে, তাহলে যে পরিমানে অর্থ নিউজিল্যান্ডের রপ্তানির জন্য দেয়া লাগে সেটা বাড়ে। যেটা পরবর্তীতে দেশের জিডিপিতে আরও বড় অবদান রাখে। যেহেতু হায়ার জিডিপি শক্তিশালী ইকোনোমিক পারফর্মেন্স ইঙ্গিত করে, এটা Kiwi এর ভ্যালু বাড়াতে পারে।
অন্যদিকে, যদি কমোডিটির প্রাইস কমে যায়, সেটা রপ্তানির মনেটারি ভ্যালু কমিয়ে দেবে, যেটা জিডিপিতে কম অবদান রাখবে। জিডিপি কম হলে Kiwi এর ভ্যালু কমিয়ে দেবে।
আমি AUD এর সাথে তাল মিলিয়ে চলি
যেহেতু অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ডের এক নম্বর ট্রেডিং পার্টনার, অস্ট্রেলিয়ার ইকোনোমিক পারফর্মেন্স নিউজিল্যান্ডের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে।
যেমন, যখন অস্ট্রেলিয়ার ইকোনোমি ভালো করে, অস্ট্রেলিয়ান কোম্পানিগুলো তাদের আমদানি বাড়িয়ে দেয়। বলুনতো এতে কার লাভ হচ্ছে? নিশ্চয়ই নিউজিল্যান্ড।
...আর AUD এর মত আমিও ক্যারি ট্রেডের মজা নেই!
অস্ট্রেলিয়ার মত নিউজিল্যান্ডও অন্যান্য মেজর ইকোনোমির তুলনায় উচ্চ ইন্টেরেস্ট রেটের মজা নেয়।
ইকোনোমির মধ্যে ইন্টেরেস্ট রেটের পার্থক্য প্রায়ই মানি ফ্লো এর ইনডিকেটর হিসেবে কাজ করে। যেহেতু ইনভেস্টররা উচ্চ রিটার্ন পছন্দ করে, তারা লোয়ার-ইয়েল্ডিং ইনভেস্টমেন্ট হায়ার-ইয়েল্ডিং অ্যাসেট অথবা কারেন্সিতে এক্সচেঞ্জ করবে। এক কথায়, ইন্টেরেস্ট রেট যত বেশী, মানি ফ্লো তত বেশী হবে।
মাইগ্রেশনের জন্য আপনাকে স্বাগতম!
যেহেতু নিউজিল্যান্ডের জনসংখ্যা নিউ ইয়র্কের অর্ধেকেরও কম, মাইগ্রেশন বাড়লে দেশের ইকনমিতে অনেক প্রভাব পরে। কারন যখন মানুষ বাড়বে, জিনিসপত্রের ডিমান্ড বাড়বে এবং পণ্যের কনজাম্পশন বাড়বে।
আমিও আবহাওয়া নির্ভর!
নিউজিল্যান্ডের ইকোনোমি চাষবাস দ্বারা পরিচালিত, তাই খারাপ আবহাওয়া যেমন অনাবৃষ্টি তাদের ইকোনোমির উপর প্রচন্ড নেগেটিভ প্রভাব ফেলে। এসব তাপপ্রবাহ অস্ট্রেলিয়াও বিদ্যমান, যা ফরেস্ট ফায়ারের কারনে হয়। এটা তাদের জিডিপির ১% এর মত ক্ষতি করে। এটা NZD এর জন্য সুখবর বয়ে আনে না...
NZD এর প্রয়োজনীয় কিছু ইনডিকেটর
গ্রস ডমেস্টিক প্রডাক্ট – অন্যান্য দেশের মত, জিডিপি রিপোর্ট নিউজিল্যান্ডের অর্থনৈতিক অবস্থা ব্যাক্ত করে। যেহেতু এটা নিউজিল্যান্ডের ইকোনোমিক পারফর্মেন্স পরিমাপ করে, তাই এটা NZD এর ডিমান্ডের উপরে প্রভাব ফেলার ক্ষমতা রাখে।
কনজুমার প্রাইস ইনডেক্স (CPI) – সিপিআই প্রাইস লেভেলে পরিবর্তনের পরিমাপ করে। ইনফ্লেশনের পরিমাপক হিসেবে, এতে RBNZ কড়াভাবে নজর রাখে যে মনেটারি পলিসিতে কোন পরিবর্তন আনতে হবে কিনা। মনে আছে তাদের উদ্দেশ্য হল প্রাইসে স্থিতিশীলতা রাখা?
ব্যালেন্স অব ট্রেড – যেহেতু নিউজিল্যান্ড রপ্তানি নির্ভর অর্থনীতি, অনেকসময় ট্রেডাররা নিউজিল্যান্ডের পণ্যের ইন্টারন্যাশনাল ডিমান্ড যাচাই করতে ট্রেড ব্যালেন্সের দিকে নজর দিয়ে থাকে।
NZD কে কি মুভ করায়?
অর্থনৈতিক উন্নয়ন
পজিটিভ জিডিপি রিপোর্ট নিউজিল্যান্ডের জন্য শক্তিশালী অর্থনীতি ইঙ্গিত করে, যেটা তাদের কারেন্সির ডিমান্ড বাড়ায়। নেগেটিভ জিডিপি রিপোর্ট ইঙ্গিত করে যে তাদের অর্থনীতি ভালো করছে না, আর সেটা NZD এর ভ্যালু কমিয়ে দেয়।
রপ্তানিতে উচ্ছাস
নিউজিল্যান্ডের পণ্যদ্রব্যের ডিমান্ড বেশী থাকলে সেটা উচ্চ জিডিপি রিপোর্টে ভুমিকা রাখে। যেটা NZD এর ভ্যালু বাড়িয়ে দেয়। অন্যদিকে, রপ্তানি কম হলে সেটা জিডিপিতে কম অবদান রাখে, যেটা NZD এর ভ্যালু কমিয়ে দেয়।
পণ্যদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি
পণ্যদ্রব্যের দাম বাড়লে সেটা নিউজিল্যান্ডের রপ্তানির অর্থের মান বাড়িয়ে দেয়, যেটা জিডিপি বাড়িয়ে দেয়। পণ্যদ্রব্যের দাম কমলে তার উল্টোটা হয়।
NZD/USD ট্রেডের কৌশল
নিউজিল্যান্ডের শক্তিশালী ইকোনোমিক রিপোর্ট NZD এর ভ্যালু বাড়িয়ে দেয়। তাই যদি দেখেন যে কোন ইকোনোমিক ডাটা যা আশা করা হয়েছিলো তার চেয়ে ভালো আসার সম্ভাবনা আছে, সেক্ষেত্রে NZD/USD বাই করার সংকেত দিয়ে থাকে।
অন্যদিকে দুর্বল ইকোনোমিক রিপোর্ট, NZD এর ভ্যালু কমায়। যদি দেখেন যে কোন ইকোনোমিক ডাটা যা আশা করা হয়েছিলো তার চেয়ে খারাপ আসার সম্ভাবনা আছে, সেক্ষেত্রে NZD/USD সেল করার প্রস্তুতি নিতে পারেন।
ইকোনোমিক রিপোর্ট বাদে, কমোডিটির প্রাইস কি ধরনের আচরন করছে সেদিকে লক্ষ্য রাখলে NZD/USD এর জন্য সিগন্যাল পেতে পারেন।
যখন ঝুঁকিপূর্ণ অ্যাসেটের ডিমান্ড বাড়ে, বেশীরভাগ সময় কমোডিটি প্রাইসে উচ্ছাস দেখা যায়। এসব সময়ে, ইনভেস্টররা তাদের অর্থ হায়ার-ইয়েল্ডিং অ্যাসেট যেমন গোল্ড এবং অন্যান্য কমোডিটিতে লাগায় এবং লোয়ার-ইয়েল্ডিং ইউএস ডলার সেল করে। ফলে, কমোডিটি ভিত্তিক Kiwi সেফ-হ্যাভেন কারেন্সি ইউএস ডলারের বিপরীতে শক্তিশালী হয়।
অন্যদিকে, যখন রিস্ক অ্যাভারশন ইনভেস্টরদের সেফ-হ্যাভেনে ফিরে যেতে বাধ্য করে, USD এর বিপরীতে NZD তার ভ্যালু হারায়।
AUD এর মত NZD ও ক্যারি ট্রেডের জন্য ভালো। ক্যারি ট্রেডের যেহেতু হাই ইন্টেরেস্ট সম্পন্ন কারেন্সি বাই এবং লো ইন্টেরেস্ট সম্পন্ন কারেন্সি সেল করতে হয়, নিউজিল্যান্ডের তুলনামূলক হাই ইন্টেরেস্ট রেট NZD কে সহায়তা করে থাকে।
লর্ড অব দ্যা রিং ছবিটি সবাই দেখেছেন তাই না? মিডেল আর্থের ওইসব পাহাড়পর্বত নিউজিল্যান্ডে অবস্থিত।
ফ্রোডো বাগিন্স এবং তার বন্ধুদের দেশ ছাড়াও ওশেনিয়ায় নিউজিল্যান্ড অস্ট্রেলিয়ার প্রতিবেশী দেশ। প্রশান্ত মহাসাগরের দক্ষিন অঞ্চলে।
দেশটি প্রধানত ২টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত। উত্তর দ্বীপ এবং দক্ষিন দ্বীপ, এবং অন্যান্য ছোট ছোট দ্বীপ।
তাদের দেশে মানুষের চেয়ে ভেড়া বেশী, আর সেজন্য তারা বিখ্যাত। নিউজিল্যান্ডে ৪ মিলিয়ন মানুষ আর ৪০ মিলিয়ন ভেড়ার বসবাস। ২০১১ সালে নিউ ইয়র্কের জনসংখ্যা ছিল ৮.৪ মিলিয়ন।
নিউজিল্যান্ডকে এর আরেক নাম হল Aotearoa, যার অর্থ মাওরিতে “Land of the Long White Cloud”। মাওরি তাদের প্রধান ভাষার মধ্যে একটি।
নিউজিল্যান্ডঃ ফ্যাক্টস, ফিগারস, এবং ফিচারস
প্রতিবেশী দেশ: অস্ট্রেলিয়া, ফিজি, টোঙ্গা
আয়তন: ১০৪,৪৫৪ বর্গ মাইল
জনসংখ্যা: ৪,২৬৮,৬০০ (১২৪ তম)
ঘনত্ব: ৪০.৯ জন প্রতি বর্গ মাইলে
রাজধানী: ওয়েলিংটন (জনসংখ্যা ১৭৯,৪৬৬)
রাষ্ট্র প্রধান: রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ
সরকার প্রধান: Prime Minister John Key
মুদ্রা: নিউজিল্যান্ড ডলার (NZD)
মুখ্য আমদানি: যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম, যানবাহন এবং বিমান, পেট্রোলিয়াম, ইলেকট্রনিক্স, টেক্সটাইল, প্লাস্টিক
মুখ্য রপ্তানি: রাসেল ক্রো, আকরিক এবং ধাতু; উল, খাদ্য ও লাইভ প্রাণী; জ্বালানি, পরিবহন যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম।
আমদানি পার্টনার: জার্মানি ১৩.৫%, ইউএস ১০.২%, ফ্রান্স ৮.১%, নেদারল্যান্ডস ৬.৩%, বেলজিয়াম ৪.৯%, ইতালি ৪.৭%
রপ্তানি পার্টনার: ইউএস ১৫.৭%, জার্মানি ১০.৫%, ফ্রান্স ৯.৫%, নেদারল্যান্ডস ৬.৯%, ৬.৫% আয়ারল্যান্ড, বেলজিয়াম ৫.৬%, ৪.৪% স্পেন, ইতালি ৪.৪%
টাইম জোন: জিএমটি +12
ওয়েবসাইট: http://www.newzealand.govt.nz
ইকোনোমিক ওভারভিউ
তাদের জনসংখ্যা যেমন কম, নিউজিল্যান্ডের ইকোনোমিও তুলনামুলকভাবে ছোট। তাদের জিডিপি ২০১১ সালে ১২৩ বিলিয়ন ইউএসডি এর সমান ছিল, আর তারা ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিতে ৬৫তম হয়েছিলো। তাই বলে নিউজিল্যান্ডকে অবমূল্যায়ন করবেন না। বাণিজ্যের দিক দিয়ে তারা যথেষ্ট শক্তিশালী।
তাদের অর্থনৈতিক কার্যকলাপ ট্রেডের উপর নির্ভরশীল, বিশেষকরে অস্ট্রেলিয়া, জাপান, এবং ইউএস এর সাথে। তারা রপ্তানি নির্ভর দেশ। তাদের মুখ্য রপ্তানিদ্রব্য আকরিক, ধাতু এবং উল তাদের জিডিপির ৩ ভাগের ১ ভাগ দখল করে আছে। এছাড়াও তারা গবাদি পশু এবং দুগ্ধ জাতীয় পণ্য রপ্তানি করে। “দুধের সেরা দুধ” – কোন ঘণ্টা বাজলো?
তাদের প্রধান ইন্ডাস্ট্রি হল কৃষি এবং পর্যটন। তাদের আবার ছোটখাটো ম্যানুফ্যাকচারিং এবং টেকনোলজি সেক্টর আছে। একারনে, তাদের আমদানি দ্রব্য মুলত ভারী যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম, যানবাহন, এবং ইলেকট্রনিক পণ্য হয়ে থাকে।
তারা যখন ফরেন ইনভেস্টমেন্টে অনেক বাধা তুলে দেয়, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক তাদের সেরা বিজনেস-ফ্রেন্ডলি দেশের মধ্যে একটির উপাধি দেয়। সিঙ্গাপুরের পরে।
মনেটারি এবং ফিস্ক্যাল পলিসি
রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউজিল্যান্ড (RBNZ)দেশের মনেটারি এবং ফিস্ক্যাল পলিসির দায়িত্বে আছে। বর্তমানে গভর্নর Alan Bollard এর নেতৃত্বে, RBNZ বছরে ৮ বার মনেটারি পলিসি মিটিং ডাকে। RBNZ এর কাজ হল প্রাইসে স্থিতিশীলতা রাখা, ইন্টেরেস্ট রেট নির্ধারণ কড়া, এবং আউটপুট এবং এক্সচেঞ্জ রেট মনিটর করা।
প্রাইসে স্থিতিশীলতা আনতে, RBNZ বাৎসরিক ১.৫% ইনফ্লেশন রেট টার্গেট নিশ্চিত করে। অন্যথায় সরকারের RBNZ গভর্নরের নিতম্বে লাথি দিয়ে বের করে দেয়ার ক্ষমতা আছে। (ফাজলামি করছি না)
RBNZ এর নিম্নোক্ত মনেটারি পলিসি ট্যুল আছেঃ
অফিসিয়াল ক্যাশ রেট (OCR), এটা সর্ট-টার্ম ইন্টেরেস্ট রেটে প্রভাব ফেলে। এটা RBNZ এর গভর্নর নির্ধারণ করে। সেন্ট্রাল ব্যাংক OCR রেটের ২৫ বেসিস পয়েন্ট বেশীতে ঋণ দেয় এবং কমার্শিয়াল ব্যাংক থেকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমে ঋণ নেয়। এতে কমার্শিয়াল ব্যাংক যে ব্যাক্তি এবং ব্যাবসাকে যে রেট অফার করে সেটা সেন্ট্রাল ব্যাংককে ইনফ্লেশন কন্ট্রোল করতে সহায়তা করে।
ওপেন মার্কেট অপারেশনস ক্যাশ টার্গেট এবং কমার্শিয়াল ব্যাংকে কত পরিমান রিজার্ভ থাকবে, সেক্ষেত্রে ব্যাবহার করা হয়। প্রতিদিন ক্যাশ টার্গেট ফোরকাস্ট করে, RBNZ ইকোনোমিতে কত পরিমানে অর্থ প্রয়োজন সেটা গননা করে।
NZD কে চেনা
নিউজিল্যান্ড ডলারের ডাকনাম হল “Kiwi”। এটা একটা পাখির নাম! Kiwi আবার নিউজিল্যান্ডের জাতীয় প্রতীক। এসবের দিকে না তাকিয়ে কারেন্সি এবং এর অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের দিকে তাকাই।
কি আছে (কমোডিটি) তা দেখান!
যেহেতু নিউজিল্যান্ড কমোডিটি এবং কৃষিজাত পণ্য রপ্তানির উপর নির্ভরশীল, তাদের ইকোনোমিক পারফর্মেন্স কমোডিটি প্রাইসের সাথে সম্পর্কযুক্ত।
যদি কমোডিটির প্রাইস বাড়ে, তাহলে যে পরিমানে অর্থ নিউজিল্যান্ডের রপ্তানির জন্য দেয়া লাগে সেটা বাড়ে। যেটা পরবর্তীতে দেশের জিডিপিতে আরও বড় অবদান রাখে। যেহেতু হায়ার জিডিপি শক্তিশালী ইকোনোমিক পারফর্মেন্স ইঙ্গিত করে, এটা Kiwi এর ভ্যালু বাড়াতে পারে।
অন্যদিকে, যদি কমোডিটির প্রাইস কমে যায়, সেটা রপ্তানির মনেটারি ভ্যালু কমিয়ে দেবে, যেটা জিডিপিতে কম অবদান রাখবে। জিডিপি কম হলে Kiwi এর ভ্যালু কমিয়ে দেবে।
আমি AUD এর সাথে তাল মিলিয়ে চলি
যেহেতু অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ডের এক নম্বর ট্রেডিং পার্টনার, অস্ট্রেলিয়ার ইকোনোমিক পারফর্মেন্স নিউজিল্যান্ডের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে।
যেমন, যখন অস্ট্রেলিয়ার ইকোনোমি ভালো করে, অস্ট্রেলিয়ান কোম্পানিগুলো তাদের আমদানি বাড়িয়ে দেয়। বলুনতো এতে কার লাভ হচ্ছে? নিশ্চয়ই নিউজিল্যান্ড।
...আর AUD এর মত আমিও ক্যারি ট্রেডের মজা নেই!
অস্ট্রেলিয়ার মত নিউজিল্যান্ডও অন্যান্য মেজর ইকোনোমির তুলনায় উচ্চ ইন্টেরেস্ট রেটের মজা নেয়।
ইকোনোমির মধ্যে ইন্টেরেস্ট রেটের পার্থক্য প্রায়ই মানি ফ্লো এর ইনডিকেটর হিসেবে কাজ করে। যেহেতু ইনভেস্টররা উচ্চ রিটার্ন পছন্দ করে, তারা লোয়ার-ইয়েল্ডিং ইনভেস্টমেন্ট হায়ার-ইয়েল্ডিং অ্যাসেট অথবা কারেন্সিতে এক্সচেঞ্জ করবে। এক কথায়, ইন্টেরেস্ট রেট যত বেশী, মানি ফ্লো তত বেশী হবে।
মাইগ্রেশনের জন্য আপনাকে স্বাগতম!
যেহেতু নিউজিল্যান্ডের জনসংখ্যা নিউ ইয়র্কের অর্ধেকেরও কম, মাইগ্রেশন বাড়লে দেশের ইকনমিতে অনেক প্রভাব পরে। কারন যখন মানুষ বাড়বে, জিনিসপত্রের ডিমান্ড বাড়বে এবং পণ্যের কনজাম্পশন বাড়বে।
আমিও আবহাওয়া নির্ভর!
নিউজিল্যান্ডের ইকোনোমি চাষবাস দ্বারা পরিচালিত, তাই খারাপ আবহাওয়া যেমন অনাবৃষ্টি তাদের ইকোনোমির উপর প্রচন্ড নেগেটিভ প্রভাব ফেলে। এসব তাপপ্রবাহ অস্ট্রেলিয়াও বিদ্যমান, যা ফরেস্ট ফায়ারের কারনে হয়। এটা তাদের জিডিপির ১% এর মত ক্ষতি করে। এটা NZD এর জন্য সুখবর বয়ে আনে না...
NZD এর প্রয়োজনীয় কিছু ইনডিকেটর
গ্রস ডমেস্টিক প্রডাক্ট – অন্যান্য দেশের মত, জিডিপি রিপোর্ট নিউজিল্যান্ডের অর্থনৈতিক অবস্থা ব্যাক্ত করে। যেহেতু এটা নিউজিল্যান্ডের ইকোনোমিক পারফর্মেন্স পরিমাপ করে, তাই এটা NZD এর ডিমান্ডের উপরে প্রভাব ফেলার ক্ষমতা রাখে।
কনজুমার প্রাইস ইনডেক্স (CPI) – সিপিআই প্রাইস লেভেলে পরিবর্তনের পরিমাপ করে। ইনফ্লেশনের পরিমাপক হিসেবে, এতে RBNZ কড়াভাবে নজর রাখে যে মনেটারি পলিসিতে কোন পরিবর্তন আনতে হবে কিনা। মনে আছে তাদের উদ্দেশ্য হল প্রাইসে স্থিতিশীলতা রাখা?
ব্যালেন্স অব ট্রেড – যেহেতু নিউজিল্যান্ড রপ্তানি নির্ভর অর্থনীতি, অনেকসময় ট্রেডাররা নিউজিল্যান্ডের পণ্যের ইন্টারন্যাশনাল ডিমান্ড যাচাই করতে ট্রেড ব্যালেন্সের দিকে নজর দিয়ে থাকে।
NZD কে কি মুভ করায়?
অর্থনৈতিক উন্নয়ন
পজিটিভ জিডিপি রিপোর্ট নিউজিল্যান্ডের জন্য শক্তিশালী অর্থনীতি ইঙ্গিত করে, যেটা তাদের কারেন্সির ডিমান্ড বাড়ায়। নেগেটিভ জিডিপি রিপোর্ট ইঙ্গিত করে যে তাদের অর্থনীতি ভালো করছে না, আর সেটা NZD এর ভ্যালু কমিয়ে দেয়।
রপ্তানিতে উচ্ছাস
নিউজিল্যান্ডের পণ্যদ্রব্যের ডিমান্ড বেশী থাকলে সেটা উচ্চ জিডিপি রিপোর্টে ভুমিকা রাখে। যেটা NZD এর ভ্যালু বাড়িয়ে দেয়। অন্যদিকে, রপ্তানি কম হলে সেটা জিডিপিতে কম অবদান রাখে, যেটা NZD এর ভ্যালু কমিয়ে দেয়।
পণ্যদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি
পণ্যদ্রব্যের দাম বাড়লে সেটা নিউজিল্যান্ডের রপ্তানির অর্থের মান বাড়িয়ে দেয়, যেটা জিডিপি বাড়িয়ে দেয়। পণ্যদ্রব্যের দাম কমলে তার উল্টোটা হয়।
NZD/USD ট্রেডের কৌশল
নিউজিল্যান্ডের শক্তিশালী ইকোনোমিক রিপোর্ট NZD এর ভ্যালু বাড়িয়ে দেয়। তাই যদি দেখেন যে কোন ইকোনোমিক ডাটা যা আশা করা হয়েছিলো তার চেয়ে ভালো আসার সম্ভাবনা আছে, সেক্ষেত্রে NZD/USD বাই করার সংকেত দিয়ে থাকে।
অন্যদিকে দুর্বল ইকোনোমিক রিপোর্ট, NZD এর ভ্যালু কমায়। যদি দেখেন যে কোন ইকোনোমিক ডাটা যা আশা করা হয়েছিলো তার চেয়ে খারাপ আসার সম্ভাবনা আছে, সেক্ষেত্রে NZD/USD সেল করার প্রস্তুতি নিতে পারেন।
ইকোনোমিক রিপোর্ট বাদে, কমোডিটির প্রাইস কি ধরনের আচরন করছে সেদিকে লক্ষ্য রাখলে NZD/USD এর জন্য সিগন্যাল পেতে পারেন।
যখন ঝুঁকিপূর্ণ অ্যাসেটের ডিমান্ড বাড়ে, বেশীরভাগ সময় কমোডিটি প্রাইসে উচ্ছাস দেখা যায়। এসব সময়ে, ইনভেস্টররা তাদের অর্থ হায়ার-ইয়েল্ডিং অ্যাসেট যেমন গোল্ড এবং অন্যান্য কমোডিটিতে লাগায় এবং লোয়ার-ইয়েল্ডিং ইউএস ডলার সেল করে। ফলে, কমোডিটি ভিত্তিক Kiwi সেফ-হ্যাভেন কারেন্সি ইউএস ডলারের বিপরীতে শক্তিশালী হয়।
অন্যদিকে, যখন রিস্ক অ্যাভারশন ইনভেস্টরদের সেফ-হ্যাভেনে ফিরে যেতে বাধ্য করে, USD এর বিপরীতে NZD তার ভ্যালু হারায়।
AUD এর মত NZD ও ক্যারি ট্রেডের জন্য ভালো। ক্যারি ট্রেডের যেহেতু হাই ইন্টেরেস্ট সম্পন্ন কারেন্সি বাই এবং লো ইন্টেরেস্ট সম্পন্ন কারেন্সি সেল করতে হয়, নিউজিল্যান্ডের তুলনামূলক হাই ইন্টেরেস্ট রেট NZD কে সহায়তা করে থাকে।