নিজেকে চেনা (১ম ভাগ)
ট্রেডিং প্ল্যান ডেভেলপের প্রথম ধাপ হল নিজের সম্পর্কে বাস্তবধর্মী একটা ধারনা নেয়া।
যেহেতু আপনার ট্রেডিং প্ল্যান আপনি ব্যাবহার করবেন তাই আপনি হলেন ট্রেডিং প্ল্যানের বুনিয়াদ। তাই আপনার নিজের ট্রেডার প্রফাইল সম্পর্কে জানা প্রয়োজন, যা হল ট্রেডার হিসেবে আপনি আসলে কি?
ট্রেডার হিসেবে আপনি আসলে কি বলতে কোন মেথড আপনার জন্য ভালো নির্ধারণ করা। স্ট্রাটেজি, সিস্টেম, এবং মেথড যেগুলো আপনার ট্রেডিং প্রফাইল এবং স্টাইলের সাথে খাপ খায় না, সেগুলো আপনার সফলতার সুযোগ অনেক কমিয়ে দেয়।
অনেক ট্রেডার আছে যারা ট্রেডিং সিস্টেম এবং স্ট্রাটেজি তৈরি অথবা খোজার জন্য আত্মহারা হয়ে পরে। তারা এটা ভাবে না যে কোনটা তাদের জন্য উপযোগী আর নিজের পারসোনালিটি সম্পর্কে সময় ব্যায় করে না।
ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মে বাই/সেল বাটনে ক্লিক করার আগে নিজেকে কিছু প্রশ্ন করবেন যাতে ভালো ট্রেডিং প্ল্যান তৈরি করতে পারেন। যখন এই কাজ করবেন তখন উত্তরগুলো কাগজে লিখে রাখবেন। পরে এগুলো দেখলে সেটা আপনাকে মনে করিয়ে দেবে যে আপনার কি করার কথা ছিল আর আপনি আপনার প্ল্যান অনুসরন করছেন কিনা।
প্রশ্ন-উত্তরের জন্য কি আপনি প্রস্তুত?
১) প্রেরনা এবং লক্ষ্য নির্ধারণ
ট্রেডার হওয়ার জন্য আপনাকে কি অনুপ্রানিত করেছে?
বড়লোক হওয়া? নাকি আপনি কিছু উত্তেজনাপূর্ণ এবং চ্যালেঞ্জিং কিছু চান? নাকি আপনার পাশের বাসার মেয়েটা কারেন্সি ট্রেড করে আর আপনি তাকে ইমপ্রেস করতে চান?
আপনার আসল লক্ষ্য কি সেটা জানা প্রয়োজন। নাকি আপনার ট্রেড করা একেবারেই উচিৎ নয়। যেসব ট্রেডার সিরিয়াস নয় অথবা এর প্রতি সমর্পিত নয় মার্কেট তাদের খুব তাড়াতাড়ি ছিটকে ফেলে দেয়।
উত্তেজনা খুজলে, ক্যাসিনোতে যান অথবা, প্লেন থেকে লাফ দিন।
কি লক্ষ্য নিয়ে ট্রেড করছেন?
এটা কোন নির্দিষ্ট সময়ের ভেতর আর্থিক অথবা পারসেন্ট রিটার্নের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করতে পারেন। যেমন প্রতি মাসে কমপক্ষে $৪,২২৩,৮৩৪,১৪৫.৫৩ অথবা ৫,৩৮৪% প্রতি সপ্তাহে ইত্যাদি।
এটা আবার অন্য কিছুও হতে পারে। যেমন “আমার ট্রেডিঙের লক্ষ্য হল আমি সখিনার বাবাকে ১০ বিঘার উপরে প্রাসাদ বানিয়ে দেখাবো যে আমি তার মেয়ের জন্য সুযোগ্য পাত্র”। অথবা “আমি প্লাস্টিক সার্জারি করে দেশের একমাত্র অ্যাকশন হিরোর মত হবো যাতে সবাই আমাকে দেখলেই হাসতে হাসতে বেহুশ হয়ে যায়”।
যথেষ্ট হয়েছে! এতক্ষণ চাপা মারছিলাম! (এখন হাসেন)
সবকিছুর পেছনে উদ্দেশ্য হল অর্থ।
যাই করেন না কেন, নিশ্চিত করে নিবেন যে সেটা নির্দিষ্ট এবং পরিমাপযোগ্য। ট্রেডের লক্ষ্য নির্ধারণ করলে সেটা আপনাকে ডেভেলপ করতে সহায়তা করবে।
সেটা অস্পস্ট হতে পারবেন না যেমন “আমি বড়লোক হতে চাই”। এটাকে পরিবর্তন করে “আমি অনেক ধনী হতে চাই” করলে চলবে না।
নির্দিষ্ট কিছু ঠিক করুন!
নিজের লক্ষকে নির্দিষ্ট এবং পরিমাপযোগ্য করলে, আপনি জানবেন যে আপনি কি চাচ্ছেন, আবার নিজে কতটুকু উন্নতি করেছেন সেটাও দেখতে পারবেন। মনে রাখবেন কেউ এখানে আপনার পরীক্ষা নেবে না। আপনি নিজের পরীক্ষক।
২) রিস্ক ক্যাপিটাল
৩) লাইফস্টাইল বিবেচনা
৪) প্রত্যাশা
এই প্রশ্নের উত্তর আপনি কোন ধরনের ট্রেডিং স্টাইল বাস্তবায়ন করতে চান, কোন কারেন্সি পেয়ার এবং ট্রেডের সময়, আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য অর্জন করতে কতটা ঝুকি জড়িত আছে, তা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে।
ভালোভাবে বোঝার জন্য একটা উদাহরন দিয়ে দেখি। ধরুন রানা আর ময়না ২জন ট্রেডার। রানা বছরে ১০% লাভের আশা করছে আর ময়না একটু বেশী উচ্চাকাঙ্ক্ষী – সে তার অ্যাকাউন্ট দ্বিগুণ করতে চায়।
চিন্তা করতে পারছেন যে, ময়নার মত ট্রেডার, যে তার অ্যাকাউন্ট দ্বিগুণ করতে চায়, একটা ভিন্ন অবস্থানে আছে।
রানার চেয়ে ময়নার অনেক বেশী ট্রেড এবং ঝুকি নিতে হবে। ময়নার তার লক্ষ্য ১০০% রিটার্ন অর্জন করতে বেশী সম্ভাব্য লসের সম্মুখীন হতে পারে।
ট্রেডারদের drawdowns এর বিষয়েও সতর্ক হতে হবে।
Drawdown গননা পদ্ধতি হল আপনার অ্যাকাউন্টের সর্বোচ্চ পয়েন্ট থেকে পরবর্তী সর্বনিম্ন পয়েন্টের দূরত্ব। (এসম্পর্কে পরে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে)
প্রতিটা ট্রেডারের উচিৎ যে তার লক্ষ্যে পৌছাতে সে কতটুকু drawdown সহ্য করতে রাজি আছে।
একদিকে, অনেক ট্রেডার আছে যারা রিস্ক অ্যাভারস আর ছোট drawdown এর পক্ষপাতী। এর জন্য তাদের সম্ভাব্য লাভ কমে যায়।
অন্যদিকে, অনেক ট্রেডার আছে যাদের বড় ধরনের drawdown এ কোন সমস্যা হয়না। যতক্ষণ তারা হায়ার রিটার্ন পায় তাদের জন্য সেটা ঠিক আছে।
এছাড়াও আপনি কতটা সময় ট্রেডের জন্য উৎসর্গ করবেন সেটাও ভেবে দেখতে হবে। যদি নিজের মেথডে পর্যাপ্ত পরিমানে সময় না দিতে পারেন, মার্কেট সম্পর্কে লেখাপড়া এবং নতুন ট্রেডিং টেকনিক, জার্নাল রেকর্ড এবং রিভিউ এর জন্য সময় না দিতে পারেন, তাহলে এটা নিশ্চিত থাকেন যে গন্তব্যে পৌছাতে আপনার অনেক কষ্ট হবে।
যদি সময় যোগাড় না করতে পারেন, তাহলে নিজের প্রত্যাশা এবং অ্যাকাউন্ট সাইজ কতটুকু বাড়াতে চান সেটা আবার নির্ধারণ করুন।
শেষে এটুকু জেনে রাখুন যে সফলতা আপনার উপরে নির্ভর করে।
যদি নিজের স্কিল ধারাবাহিকভাবে উন্নতিসাধনের ডিসিপ্লিন না থাকে, তাহলে লং-টার্মে ধারাবাহিকভাবে লাভের আশা করবেন না, যদি লাভ করে থাকেন, তাহলে।
৫) দৈনিক প্রি-মার্কেট রুটিন
আপনার প্রি-মার্কেট রুটিন ট্রেডার হিসেবে আপনার সফলতায় অনেক ভুমিকা রাখবে। এটা আপনাকে সারাদিনে কি করবেন সেজন্য প্রস্তুত করবে যাতে আপনি ট্রেডিং সময় কোন নিউজ অথবা ডাটা মার্কেটে ঝড় তুলেছে তা নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়বেন না। অথবা যদি মার্কেট আপনার আশামত না চলে তাহলে কি করবেন তার জন্যেও প্রস্তুত থাকবেন।
আপনি আপনার ট্রেডিং সেশন শুরু করবেন নিশ্চিন্তে, ঠাণ্ডা মাথায়, মার্কেট আপনার দিকে যাই ছুড়ে দেক না কেন আপনি তার জন্য প্রস্তুত থাকবেন।
টেকনিক্যাল এবং ফান্ডামেন্টাল যেগুলো মার্কেটে প্রভাব ফেলছে সেগুলোর খবর রাখবেন। অন্ধকারে ট্রেড করলে ক্ষতবিক্ষত হতে হবে।
ট্রেডিং প্ল্যান ডেভেলপের প্রথম ধাপ হল নিজের সম্পর্কে বাস্তবধর্মী একটা ধারনা নেয়া।
যেহেতু আপনার ট্রেডিং প্ল্যান আপনি ব্যাবহার করবেন তাই আপনি হলেন ট্রেডিং প্ল্যানের বুনিয়াদ। তাই আপনার নিজের ট্রেডার প্রফাইল সম্পর্কে জানা প্রয়োজন, যা হল ট্রেডার হিসেবে আপনি আসলে কি?
ট্রেডার হিসেবে আপনি আসলে কি বলতে কোন মেথড আপনার জন্য ভালো নির্ধারণ করা। স্ট্রাটেজি, সিস্টেম, এবং মেথড যেগুলো আপনার ট্রেডিং প্রফাইল এবং স্টাইলের সাথে খাপ খায় না, সেগুলো আপনার সফলতার সুযোগ অনেক কমিয়ে দেয়।
অনেক ট্রেডার আছে যারা ট্রেডিং সিস্টেম এবং স্ট্রাটেজি তৈরি অথবা খোজার জন্য আত্মহারা হয়ে পরে। তারা এটা ভাবে না যে কোনটা তাদের জন্য উপযোগী আর নিজের পারসোনালিটি সম্পর্কে সময় ব্যায় করে না।
ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মে বাই/সেল বাটনে ক্লিক করার আগে নিজেকে কিছু প্রশ্ন করবেন যাতে ভালো ট্রেডিং প্ল্যান তৈরি করতে পারেন। যখন এই কাজ করবেন তখন উত্তরগুলো কাগজে লিখে রাখবেন। পরে এগুলো দেখলে সেটা আপনাকে মনে করিয়ে দেবে যে আপনার কি করার কথা ছিল আর আপনি আপনার প্ল্যান অনুসরন করছেন কিনা।
প্রশ্ন-উত্তরের জন্য কি আপনি প্রস্তুত?
১) প্রেরনা এবং লক্ষ্য নির্ধারণ
ট্রেডার হওয়ার জন্য আপনাকে কি অনুপ্রানিত করেছে?
বড়লোক হওয়া? নাকি আপনি কিছু উত্তেজনাপূর্ণ এবং চ্যালেঞ্জিং কিছু চান? নাকি আপনার পাশের বাসার মেয়েটা কারেন্সি ট্রেড করে আর আপনি তাকে ইমপ্রেস করতে চান?
আপনার আসল লক্ষ্য কি সেটা জানা প্রয়োজন। নাকি আপনার ট্রেড করা একেবারেই উচিৎ নয়। যেসব ট্রেডার সিরিয়াস নয় অথবা এর প্রতি সমর্পিত নয় মার্কেট তাদের খুব তাড়াতাড়ি ছিটকে ফেলে দেয়।
উত্তেজনা খুজলে, ক্যাসিনোতে যান অথবা, প্লেন থেকে লাফ দিন।
কি লক্ষ্য নিয়ে ট্রেড করছেন?
এটা কোন নির্দিষ্ট সময়ের ভেতর আর্থিক অথবা পারসেন্ট রিটার্নের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করতে পারেন। যেমন প্রতি মাসে কমপক্ষে $৪,২২৩,৮৩৪,১৪৫.৫৩ অথবা ৫,৩৮৪% প্রতি সপ্তাহে ইত্যাদি।
এটা আবার অন্য কিছুও হতে পারে। যেমন “আমার ট্রেডিঙের লক্ষ্য হল আমি সখিনার বাবাকে ১০ বিঘার উপরে প্রাসাদ বানিয়ে দেখাবো যে আমি তার মেয়ের জন্য সুযোগ্য পাত্র”। অথবা “আমি প্লাস্টিক সার্জারি করে দেশের একমাত্র অ্যাকশন হিরোর মত হবো যাতে সবাই আমাকে দেখলেই হাসতে হাসতে বেহুশ হয়ে যায়”।
যথেষ্ট হয়েছে! এতক্ষণ চাপা মারছিলাম! (এখন হাসেন)
সবকিছুর পেছনে উদ্দেশ্য হল অর্থ।
যাই করেন না কেন, নিশ্চিত করে নিবেন যে সেটা নির্দিষ্ট এবং পরিমাপযোগ্য। ট্রেডের লক্ষ্য নির্ধারণ করলে সেটা আপনাকে ডেভেলপ করতে সহায়তা করবে।
সেটা অস্পস্ট হতে পারবেন না যেমন “আমি বড়লোক হতে চাই”। এটাকে পরিবর্তন করে “আমি অনেক ধনী হতে চাই” করলে চলবে না।
নির্দিষ্ট কিছু ঠিক করুন!
- “আমি সপ্তাহে ১% লাভ করতে চাই।”
- “বছর শেষে আমার ৫০% লাভজনক ট্রেড থাকবে।”
- “৬ মাসে আমি আমার অ্যাকাউন্ট দিগুন করতে চাই।”
- “আজকের দিনে আমি ট্রেডে কোন ভুল করতে চাই না।”
নিজের লক্ষকে নির্দিষ্ট এবং পরিমাপযোগ্য করলে, আপনি জানবেন যে আপনি কি চাচ্ছেন, আবার নিজে কতটুকু উন্নতি করেছেন সেটাও দেখতে পারবেন। মনে রাখবেন কেউ এখানে আপনার পরীক্ষা নেবে না। আপনি নিজের পরীক্ষক।
২) রিস্ক ক্যাপিটাল
- কতটা মূলধন আপনি রিস্ক নিচ্ছেন? কত দিয়ে আপনি ট্রেড করতে পারবেন এবং কতটুকু হারানোর ক্ষমতা আছে আপনার?
- আপনি ট্রেড করতে পারবেন কিনা সেটা নির্ধারণ করা প্রয়োজন।
- শুধুমাত্র যেটা পরিমানে অর্থ হারানোর সামর্থ্য আছে সেই পরিমান অর্থ নিয়ে ট্রেড করা উচিৎ।
- যা হারানোর ক্ষমতা নেই সেটা দিয়ে কখনো ট্রেড করবেন না।
- যে অর্থ আপনার জীবনধারণের কাজে ব্যাবহার করা প্রয়োজন আর সেটা যদি আপনি আপনার ট্রেডের কাজে লাগান, তাহলে সেটা আপনার ট্রেডিং ডিসিশনের উপর প্রভাব ফেলবে।
- একটু চিন্তা করে দেখুন যে অর্থ দিয়ে আপনার বাবা-মা ভাত খাবে, সেটা আপনি ট্রেডে ব্যাবহার করছেন। আর তখন আপনার অবস্থা কি হবে যদি সেই অর্থ হারান?
- প্রতি পিপ যা আপনার অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স কমাবে আপনি মনেমনে বলবেন যে “ওই যাচ্ছে মা-বাবার খাবারের দাম।”
- যদি এরকম না চেয়ে থাকেন তাহলে যান আপনার যা আছে সব দিয়ে ডিপোজিট করেন।
- বোকার মত কাজ কখনোই করবেন না।
- ঘরে খাবারের জন্য পয়সাকড়ি না থাকলে, ফরেক্স মার্কেটে ঢোকার চিন্তাও করবেন না।
- ডেমো অ্যাকাউন্ট ব্যাবহার করতে থাকেন যতক্ষণ পর্যন্ত না বুঝতে পারেন যে আপনি কি করছেন।
- পরবর্তীতে রিস্ক ম্যানেজমেন্ট এবং মূলধন কিভাবে ম্যানেজ করতে হয় তা নিয়ে আলোচনা করবো।
৩) লাইফস্টাইল বিবেচনা
- দিনে/মাসে/সপ্তাহে (যেটা উপযুক্ত) ট্রেডের জন্য এবং ট্রেড ম্যানেজ করার জন্য কতটুকু সময় দিতে পারবেন?
- আপনার সময়ের লভ্যতা আপনার ট্রেডিং স্টাইল নির্ধারণ করবে।
- টাইমফ্রেম যত ছোট ব্যাবহার করবেন, তত বেশী সময় আপনাকে চার্টের সামনে বসে থাকতে হবে।
- যদি ডে-ট্রেডার হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার দিনের ভেতরে ট্রেড ওপেন/ক্লোজ করতে হবে, আর তার জন্য আপনাকে কম্পিউটারের সামনে বসে থাকতে হবে।
- যত বড় টাইমফ্রেম ব্যাবহার করবেন, তত কম সময় আপনাকে মার্কেট মনিটর করতে হবে। আপনি সময়তে নিজের ট্রেড চেক করতে পারেন।
- চিত্তবিনোদনের কথা ভুলবেন না!
- যখন আপনি বলেন যে আপনি দিনে ৮ ঘণ্টা ট্রেড করেন, এর মানে কি এই যে আপনি ৮ ঘন্টাই চার্টের দিকে তাকিয়ে থাকেন অথবা ইকোনোমিক ডাটা অ্যানালাইজ করেন। নাকি এর মানে ৮ ঘন্টা চার্টের দিকে তাকিয়ে থাকেন অথবা ইকোনোমিক ডাটা অ্যানালাইজ করেন, চা বানান, ফেসবুকে মেয়েদের প্রফাইল ঘাটান, ইউটিউবে ভিডিও দেখেন।
- যদি স্ক্যাল্পার হয়ে থাকেন, তাহলে এজন্য অনেক এন্ট্রি এবং এক্সিট মিস করবেন। পরে দেখা যাবে যে সুযোগ মিস করার জন্য দুঃখে আপনি নিজের মাথাই স্ক্যাল্প করে ফেলেছেন।
- ট্রেডিং মেথড ডেভেলপের জন্য নিজেকে নিবেদিত করতে হবে। নিজের মেথডে ট্রেড করতে গেলে এন্ট্রির জন্য চার্টের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। যখন ট্রেডে এন্ট্রি করবেন, তারপর সেটা ম্যানেজ করতে হবে।
- যখন ট্রেড থেকে এক্সিট করবেন, তখন ট্রেড রিভিউ দিবেন যে কোনভাবে এটাকে সংশোধন করা যায় কিনা। আর ট্রেডের সময় কি করেছিলেন আর কি ভাবছিলেন সবকিছু লিখে রাখার জন্য ট্রেডিং জার্নাল ব্যাবহারের জন্যেও সময় বের করা প্রয়োজন।
- এই সবের জন্য আপনার কত সময় লাগবে সেটা আপনার ট্রেডিং মেথডের উপর নির্ভর করবে।
- সাধারনত, আপনি কতটুকু সময় ট্রেডের জন্য দিতে পারবেন সেটা নির্ধারণ করতে হবে।
- এটা বলা হল এই চিন্তা করে যে আপনার ট্রেডের জন্য একটা মেথড আছে।
- আপনার যদি এর বেশী থাকে তাহলে প্রতিটার জন্য এই প্রসেস রিপিট করবেন।
৪) প্রত্যাশা
- কোন ধরনের রিটার্ন আপনি আশা করছেন?
- ট্রেডের সাথে ঝুকি জড়িত, আর যারা ঝুকি নেয় তারা এর প্রতিদান চাইবে।
- এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই যে প্রতিটা ট্রেডারই লাভ করতে চায়।
- নিজেকে যেই প্রশ্নটা করা প্রয়োজন সেটা হলঃ
- কোন ধরনের রিটার্ন আপনি আশা করছেন?
এই প্রশ্নের উত্তর আপনি কোন ধরনের ট্রেডিং স্টাইল বাস্তবায়ন করতে চান, কোন কারেন্সি পেয়ার এবং ট্রেডের সময়, আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য অর্জন করতে কতটা ঝুকি জড়িত আছে, তা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে।
ভালোভাবে বোঝার জন্য একটা উদাহরন দিয়ে দেখি। ধরুন রানা আর ময়না ২জন ট্রেডার। রানা বছরে ১০% লাভের আশা করছে আর ময়না একটু বেশী উচ্চাকাঙ্ক্ষী – সে তার অ্যাকাউন্ট দ্বিগুণ করতে চায়।
চিন্তা করতে পারছেন যে, ময়নার মত ট্রেডার, যে তার অ্যাকাউন্ট দ্বিগুণ করতে চায়, একটা ভিন্ন অবস্থানে আছে।
রানার চেয়ে ময়নার অনেক বেশী ট্রেড এবং ঝুকি নিতে হবে। ময়নার তার লক্ষ্য ১০০% রিটার্ন অর্জন করতে বেশী সম্ভাব্য লসের সম্মুখীন হতে পারে।
ট্রেডারদের drawdowns এর বিষয়েও সতর্ক হতে হবে।
Drawdown গননা পদ্ধতি হল আপনার অ্যাকাউন্টের সর্বোচ্চ পয়েন্ট থেকে পরবর্তী সর্বনিম্ন পয়েন্টের দূরত্ব। (এসম্পর্কে পরে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে)
প্রতিটা ট্রেডারের উচিৎ যে তার লক্ষ্যে পৌছাতে সে কতটুকু drawdown সহ্য করতে রাজি আছে।
একদিকে, অনেক ট্রেডার আছে যারা রিস্ক অ্যাভারস আর ছোট drawdown এর পক্ষপাতী। এর জন্য তাদের সম্ভাব্য লাভ কমে যায়।
অন্যদিকে, অনেক ট্রেডার আছে যাদের বড় ধরনের drawdown এ কোন সমস্যা হয়না। যতক্ষণ তারা হায়ার রিটার্ন পায় তাদের জন্য সেটা ঠিক আছে।
এছাড়াও আপনি কতটা সময় ট্রেডের জন্য উৎসর্গ করবেন সেটাও ভেবে দেখতে হবে। যদি নিজের মেথডে পর্যাপ্ত পরিমানে সময় না দিতে পারেন, মার্কেট সম্পর্কে লেখাপড়া এবং নতুন ট্রেডিং টেকনিক, জার্নাল রেকর্ড এবং রিভিউ এর জন্য সময় না দিতে পারেন, তাহলে এটা নিশ্চিত থাকেন যে গন্তব্যে পৌছাতে আপনার অনেক কষ্ট হবে।
যদি সময় যোগাড় না করতে পারেন, তাহলে নিজের প্রত্যাশা এবং অ্যাকাউন্ট সাইজ কতটুকু বাড়াতে চান সেটা আবার নির্ধারণ করুন।
শেষে এটুকু জেনে রাখুন যে সফলতা আপনার উপরে নির্ভর করে।
যদি নিজের স্কিল ধারাবাহিকভাবে উন্নতিসাধনের ডিসিপ্লিন না থাকে, তাহলে লং-টার্মে ধারাবাহিকভাবে লাভের আশা করবেন না, যদি লাভ করে থাকেন, তাহলে।
৫) দৈনিক প্রি-মার্কেট রুটিন
- ট্রেড শুরু করার আগে কি করবেন?
- এখানে দাত মাজা অথবা গোসল করার কথা বলা হচ্ছে না (যদিও আপনার এসব করা উচিৎ)।
- আপনার রুটিন দ্বারা নিম্নোক্ত টাস্কগুলো সাধন হতে হবেঃ
- ওপেন পজিশনগুলো রিভিউ দেয়া আর প্রয়োজনমত নিয়ন্ত্রন করা।
- আগের দিনের ট্রেডগুলো রিভিউ দেয়া।
- নিজেকে মার্কেটের সাথে খাপ খায়িয়ে নেয়া।
- আসন্ন কোন নিউজ যেটা মার্কেটে ভলাটিলিটি তৈরি করতে পারে সেটা চিনহিত করা।
- যখন পরবর্তী ট্রেডিং সেশন শুরু হয়, তখন প্রস্তুত থাকা।
- প্রথমে আপনার ওভারঅল মার্কেট নিউজগুলো রিভিউ দেয়ার প্রয়োজন হতে পারে। এরকম daily round up অনেক সাইট করে থাকে। ঠিক করে নিন যে ওভারঅল মার্কেট সেন্টিমেন্ট কি আছে, গতকালের ট্রেডগুলো রিভিউ দিন, দেখুন যে আগের ট্রেডিং সেশন কিভাবে শেষ হয়েছে, এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ মার্কেট এরিয়া যেমন সাপোর্ট/রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো চিনহিত করতে পারেন।
- এখন আপনার নিজের মেথডের উপর ট্রেড শুরু করার সময়!
আপনার প্রি-মার্কেট রুটিন ট্রেডার হিসেবে আপনার সফলতায় অনেক ভুমিকা রাখবে। এটা আপনাকে সারাদিনে কি করবেন সেজন্য প্রস্তুত করবে যাতে আপনি ট্রেডিং সময় কোন নিউজ অথবা ডাটা মার্কেটে ঝড় তুলেছে তা নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়বেন না। অথবা যদি মার্কেট আপনার আশামত না চলে তাহলে কি করবেন তার জন্যেও প্রস্তুত থাকবেন।
আপনি আপনার ট্রেডিং সেশন শুরু করবেন নিশ্চিন্তে, ঠাণ্ডা মাথায়, মার্কেট আপনার দিকে যাই ছুড়ে দেক না কেন আপনি তার জন্য প্রস্তুত থাকবেন।
টেকনিক্যাল এবং ফান্ডামেন্টাল যেগুলো মার্কেটে প্রভাব ফেলছে সেগুলোর খবর রাখবেন। অন্ধকারে ট্রেড করলে ক্ষতবিক্ষত হতে হবে।